
করোনার মধ্যে আম্পানে হতাশ গোমস্তাপুরের
আম চাষীরা
♦ শফিকুল ইসলাম, গোমস্তাপুর
করোনা পরিস্থিতিতে আম বিপনণ নিয়ে এমনিতেই যখন চরম চিন্তিত আম চাষীরা, ঠিক তখনই ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে লন্ডভন্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার আম ব্যবসায়ীরা। গত ২ মাস যাবত করোনা কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে সরকারের আশ^াসে যখন আম বিপনণ নিয়ে আম চাষীরা কিছুটা আশার আলো দেখছিল, ঠিক তখনই গত বুধবার রাতের ঝড় বৃষ্টিতে ম্লাণ হয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে গত বুধবার রাতের ঝড়ে উপজেলার কম-বেশি ৪ হাজার ১’শ ৭৫ হেক্টর জমির আম ফল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চলতি বছর আম উৎপাদন আশা করা হয়েছিল ৪৫ হাজার ৯’শ ২৫ মেট্টিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ১৮ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, এবার বিলম্বে মুকুল আসায় এবং বৈরি আবহাওয়ার কারণে আম কম হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিপনণ নিয়ে চিন্তিত থাকায় আম চাষীরা গাছের পরিচর্যা ও সেভাবে করেনি। তবে এবার আম গাছে তুলনামূলক ভাবে কীটনাশকের ব্যবহারও কম হয়েছে। তাই এবার অনেকটা প্রকৃতিগতভাবেই আম বেড়ে উঠছে এবং পরিপক্ক হতে সময় লাগছে। এদিকে করোনা কারণে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আম বিপনণ নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে সমস্যার কথাগুলো আম চাষীরা উল্লেখ করেছেন তা-হলো, সড়ক পথে গাড়ি চলাচলে অসুবিধা, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতা না আসা, রহনপুর আম বাজারের স্থান সম্প্রসারণ না থাকা, উন্মুক্ত স্থানে বিপনণের ব্যবস্থা করা আশানুরুপ দাম না
পাওয়া, ক্রেতার উপস্থিতি কম হওয়ার ও প্রশাসনিক হয়রানির আশংকা। এক্ষেত্রে তাদের সুপারিশ আম
পরিবহনে রহনপুর রেল ষ্টেশন থেকে মালবাহী স্পেশাল ট্রেন চালু, সড়ক পথে আমবাহী ট্রাক চলাচলে সহযোগিতা, আম বাজার উন্মুক্ত করা, ক্রেতাদের অবাধ যাতয়াত নিশ্চিত করা ও হয়রানি বন্ধ করা। এদিকে, সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রনালয়ের সহায়তা আম চাষীদের দাবীগুলো বিবেচনায় রেখেছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে আম চাষী সমবায় সমিতি সভাপতি মাইনুল বিশ্বাস জানান, এমনিতে করোনা কারণে আম বিপনণ নিয়ে যখন আমার চিন্তিত ঠিক তখনই ঘূর্ণিঝড় আম্পানে প্রভাবে ঝড় বৃষ্টির কারণে প্রায় সিকিভাগ আম ঝড়ে পড়েছে। এছাড়া আম বিপনণের বিষয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাধ্যমে আমাদের কিছু সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। গুটি জাতীয় আম দিয়ে আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এ এলাকায় আম মৌসুম শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। জেলার অন্যতম বৃহৎ আম বাজার রহনপুর ষ্টেশন আম বাজারে করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে স্থানান্তর করা হতে পারে বলে রহনপুর আম আড়ৎদার সমবায় সমিতি সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান খান মতি জানান। তিনি আরও জানান, আম বাজার স্থানান্তর হলেও রহনপুর রেল ষ্টেশন চত্বরের আম আড়ৎ গুলোতে আম প্যাকেট জাত করা কাজ অব্যাহত থাকবে।