অতিরিক্ত নৌকা ভাড়ার কারণে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলবাসী। দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তির কোন সমাধান হচ্ছে না। এমনিতেই পদ্মার ভাঙ্গনে দিশেহারা চরাঞ্চলের মানুষগুলো, তার উপর আবার নৌকায় যাতায়াতে জিম্মি করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃস্টি কামনা করেছেন ভূক্তভোগীরা। সরজমিন ঘুরে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর পাঁকার পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা মোমিন উদ্দিন। তিনি গ্রামাঞ্চলে সাইকেলে ফেরী করে থান কাপড় বিক্রি করেন। ইদানিং মেয়েদের জন্য থ্রি-পিচের কাপড়ও বিক্রি করছেন তিনি। এসব কাপড় জেলা শহরের ক্লথ ষ্টোর গুলো থেকে গাট্টি বেঁধে কিনে নিয়ে যান। কিন্তু নৌকায় ওই গাট্টি নিয়ে যেতে হলে গুনতে হবে মোটা অংকের টাকা। মোমিন বলেন, সাধারণ যাত্রিদের ভাড়ার পাশাপাশি যাত্রীদের বহন করা ব্যাগ কিংবা বস্তারও ভাড়া গুনতে হয় দ্বিগুন। আমি নৌকায় আমার ভাড়া দিয়েছি। এ ছাড়াও থান ও থ্রি-পিচ কাপড়ের গাট্টি নৌকায় পার করতে গিয়ে দিতে হয়েছে ১২০০ টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের আলিমনগর ঘাট থেকে চরাঞ্চলে যাওয়ার জন্য জহোরপুর, বাখের আলী, দক্ষিন ও উত্তর পাঁকা মিলিয়ে মোট ৪টি ঘাট আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এসব ঘাটে যাতায়াতের সময় নৌকায় বিশ কেজির এক কার্টুনে ৬০০ টাকা, মোটর সাইকেলে একশ টাকার পরিবর্তে ১৫০ টাকা, সিমেন্টের বস্তা প্রতি ত্রিশ টাকার বদলে ৫০ টাকা, ঔষধের একটি কার্টুন পারাপার করতে ঘাটের ইজারাদারকে দিতে হয় ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত। দুলালের ১২ বিঘা জমিতে উৎপাদন হয় ধান, কলাই, গম, কলা আর কাঁচা সবজি।উৎপাদিত ফসল বিক্রির জন্য বাজারে নিতে নৌকায় ভাড়ায় খরচ বাড়ে দ্বিগুন।তিনি বলেন; ‘ধান কিংবা গমের বস্তা নৌকায় পারাপার করলে দিতে হয় ৫০-৫৫ টাকা।প্রতিটি কলার কাঁদি বিশ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও ঘাটের লোকজন ৪০-৪৫ টাকা করে নিচ্ছে। মাসুম নামের এক পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা বলেন, নৌকায় গরু পারাপারে উপজেলা প্রশাসন ৫শ টাকা টোল নির্ধারণ করলেও ঘাটের মালিক নেয় ৬০০ টাকা।বিভিন্ন ধরণের আটা, ভুষি, খৈল, সারের বস্তার ভাড়া নেয় ৪৫-৫০ টাকা। প্রতিবাদ করতে গেলে ঘাটের লোকজন আমাদের মারমুখি আচারণ করেন। পদ্মা পাড়ের আরেক বাসিন্দা তোজাম্মেল বলেন, চলতি সপ্তাহে ২৫ কেজি ওজনের একটি লোহার জানালা পারাপার করতে নৌকা ভাড়া নিয়েছে ২৫০ টাকা। ঘাটের ইজাদারদর প্রশাসনের নিদিষ্ট ভাড়ায় নৌকা চালাতে বললেও তারা শুনেনা। ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাইনা। কাজের তাগিদে বাধ্য হয়ে শহর মুখি হতে হয়। আলিমনগর ঘাটের ইজারাদারকে সরাসরি না পাওয়া গেলেও তার এক অনুসারীর সাথে কথা হয়। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তেলের দাম বেড়েছে। যার কারণে আমরা একটু ভাড়া বাড়িয়ে নিই। তাছাড়া আমরা আমাদের কাজ ঠিকমতো পালন করি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, ভাড়া বেশি নেওয়ার খবর পাইনি। সদর ও শিবগঞ্জের ইউএনও কে বলে বিষয়টির ব্যবস্থা নিতে বলবো।