
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি \ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ভবন চত্বরে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে বাংলার বীর সন্তানকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। সকালে পুস্পার্ঘ অর্পণকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, পুলিশ সুপার বশির আহম্মদ পিপিএম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজ¯^) তৌফিকুল ইসলাম,
মুক্তিযোদ্ধা ও সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রুহুল আমিন, মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, এ্যাড, আব্দুস সামাদ, মুক্তিযোদ্ধাগণ, এএসপি সার্কেল ওয়ারেছ আলী মিয়া, জেলা প্রশাসনের এনডিসি রামকৃষ্ণ বর্মন, ম্যাজিষ্ট্রেট আল ইমরান, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের মানুষ। এসময় শহীদ জাহাঙ্গীরের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সোনামসজিদ চত্বরে শহীদ জাহাঙ্গীরের সমাধীতে পুস্পার্ঘ অর্পণ, মাজার জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে জেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত হন। উল্লেখ্য, বাঙলা মায়ের দামাল সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পার্শ্বে মহানন্দা নদীর তীরবর্তী গ্রাম রেহায়চর এলাকায় সংগঠিত হয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সুম্মুখযুদ্ধে ধ্বংস করে দেয় শত্রæ বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার। শত্রæমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ১৩ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর শহর মুক্ত করতে কয়েকটি নৌকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রেহায়চর এলাকায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। সম্মুখযুদ্ধে একের পর এক পরাস্ত করতে থাকেন শত্রু বাহিনীকে। ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধার কেটে সকালে সূর্য ওঠার আগেই নির্ভিক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাহাঙ্গীর সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে চলেন এবং ধ্বংস করে দেন শত্রু বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার। জাহাঙ্গীরের দুসাহসিক ও দুরন্ত আক্রমণে শত্রু বাহিনী তাদের আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। রেহায়চর ঘাটের কাছেই শত্রæ বাহিনীর সর্বশেষ বাংকারটি দখল করতে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এগোতে থাকার সময় হটাৎ শত্রæ বাহিনীর একটি গুলি এসে লাগে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের কপালে। লুটিয়ে পড়েন মাটিতে বাংলার এই বীর সন্তান এবং সেখানেই শাহাদাত বরণ করেন। পরের দিন শহীদ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে দাফন করা হয় হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ (রহঃ)-এর পুণ্যভূমি বাংলার পুরাতন রাজধানী গৌড়ের ঐতিহাসিক সোনামসজিদ চত্বরে।