চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক শিক্ষার্থী ও এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার বারঘরিয়া এবং ভোলাহাট থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। সদর উপজেলার বারঘরিয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এক কলেজ ছাত্র আত্নহত্যা করে এবং আমগাছের ডালে ঝুলন্ত নিজ লুঙ্গি গলায় পেঁচানো বিবস্ত্র অবস্থায় থাকা এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার (১৭ জুলাই) রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার বারঘরিয়া নতুন বাজারের মহানন্দা মেসের নিজ কক্ষে কলেজছাত্রের এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত কলেজছাত্র মো. ফাহিম আহমেদ (১৮), নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার পারকোল গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলেটেকনিক ইন্সটিটিউটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র ছিল। এর আগে রবিবার (১৬ জুলাই) রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ি ইউনিয়নের বদামপঁচা বিলের একটি আমবাগানের গাছের ডাল থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নাজিম উদ্দীন (৩৬) একই ইউনিয়নের তিলকী গ্রামের শওকত আলীর ছেলে। নিহত নাজিম পেশায় মুদি দোকানী ও বিকাশ এজেন্ট ছিল। নিহতের স্বজন, সহপাঠী, হাসপাতাল ও পুলিশ সুত্র জানায়, কলেজ ছাত্র ফাহিম আহমেদ আত্মহত্যার আগে তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে একটি আবেগঘণ স্ট্যাটাস দেয়। পরে তা দেখে তার এক ভাই মেস মালিককে বলে লোকজন পাঠায়। তারা সেখানে গিয়ে তার মরদেহ ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচা ঝুলে থাকতে দেখে। পরে পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ফাহিমের মা, সহপাঠী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলেটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান জানায়, প্রেমঘটিত সমস্যা ও হতাশা থেকে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, ভোলাহাটের নিহত ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দীনের চাচাতো ভাই এমদাদুল হক ও নাসিমুল হক জানান, নাজিম সন্ধ্যার দিকে দোকানে ছেলেকে বসিয়ে বের হয়ে বিলের দিকে যায়। পরে রাত সাড়ে ৯টায় দিকে বিবস্ত্র অবস্থায় আমগাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। তার নিজের লুঙ্গি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তারা অভিযোগ করেন, এটি কোন স্বাভাবিক আত্নহত্যা নয়। এমনকি তার কোন পারিবারিক বা কোন ঝামেলা বিবাদ ছিল না। তাকে হত্যা করে ঝুঁলিয়ে রাখা হতে পারে। মরদেহের পাশেই তার ব্যবহৃত ফোন ও কিছু টাকা এবং ১০০ গজ দূরে তার সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। তার শ্বাসরোধ করা হয়েছে এবং যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তারা।
দুটি মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ জানান, মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুটি ঘটনায় সদর ও ভোলাহাট থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।