স্টাফ রিপোর্টার \ সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে এসে সাংসদের তদবীরে ছেড়ে দেয়ার সংবাদ ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ পত্রিকায় ২২মে প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় পুলিশ প্রশাসনে। অবশেষে বিতর্কের অবসান ঘটাতে সোমবার বিকেলে ছেড়ে দেয়া ওয়ারেন্টভূক্ত সেই আসামী নুরুজ্জামানকে আবারও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাজাপ্রাপ্ত আসামী কানসাট বাজারের সরবত আলী ব্যাপারীর ছেলে নুরুজ্জামান কসাই। গত ২০মে দিবাগত রাতে কানসাট থেকে নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করা শিবগঞ্জ থানার এস.আই মোঃ রেজাউল করিমই আবার তাকে গ্রেফতার করে। এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুল ইসলাম হাবিব জানান, সোমবার বিকেলে ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী নুরুজ্জামানকে কানসাট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আবারও সেই নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করায় জনমনে পুলিশের প্রতি আস্থার সঞ্চার হয়েছে। আগামীতেও যেন পুলিশ সকল বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে কাজ করেন, সেটাই আশা করছেন এলাকাবাসী। উল্লেখ্য, সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত আসামী নুরুজ্জামানকে গত শনিবার রাতে গ্রেফতার করার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ গোলাম রাব্বানীর তদবীরে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় শিবগঞ্জ থানা পুলিশ। এঘটনা নিয়ে এলাকায় নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার কানসাট গোপালনগর মোড়ের সারোয়ার হোটেলের সামনে থেকে শিবগঞ্জ থানার এস.আই রেজাউল করিমের নেতৃত্বে টহলরত একদল পুলিশ দীর্ঘদিন থেকে পলাতক ও আদালতের সাজাপ্রাপ্ত এবং গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত আসামী নুরুজ্জামান কসাইকে গ্রেফতার করে এবং থানা হাজতে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময়ই এই প্রতিবেদকের চোখে পড়ে এবং এস.আই রেজাউল করিমের সাথে কথা বলে জানা যায় সে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত এই আসামীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় পুলিশের উপর আসামী ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রচন্ড চাপ। অবশেষে প্রভাবশালী মহলের এই তদবীরের কারণে সাজাপ্রাপ্ত এই আসামীকে ছেড়ে দেয়া হয়। ২০১৩ সালে ব্যবসা করার জন্য নুরুজ্জামান কসাই আবু তালেবের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা নেয়। পরে পাওনা টাকা চাইতে গেলে সাজাপ্রাপ্ত আসামী নুরুজ্জামান ২৫ লাখ টাকার একটি চেক দেয় আবু তালেবকে। উত্তরা ব্যাংক কানসাট শাখার দেয়া চেকে উক্ত ব্যাংক এ্যাকাউন্টে কোন টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার হয়। পরে আবু তালেবের স্ত্রী আঁখি তারা বেগম বাদি হয়ে ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারী মামলা দায়ের করেন, মামলা নম্বর-৪১৮/১৪। মামলায় আদালত গত ২৩/০৩/২০১৭ ইং তারিখে আসামী নুরুজ্জামান কসাইকে এক বছরের কারাদন্ড ও ২৫ লাখ টাকার অর্থদন্ডের রায় ষোষণা করেন। এদিকে ১৯/০৪/২০১৭ইং তারিখে ৬৭২ স্মারকে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গ্রেফতারী পরোয়ানার প্রেক্ষিতে এস.আই রেজাউল করিম শনিবার দিবাগত রাতে সাজাপ্রাপ্ত আসামী নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে। থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।