


জোহরুল ইসলাম নাচোল থেকে \ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল রেলষ্টেশন মাষ্টার মোঃ আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টিকিট মাষ্টার আহসান হাবিব সরকারী কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই রাতের আঁধারে কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রি, রেলষ্টেশনের বরাদ্ধকৃত জমিতে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে অবৈধভাবে জায়গা দখল করতে ভূমিদস্যুদের সহায়তা করা ছাড়াও রাতের আঁধারে রেলের লাক্ষা (লাহার) গাছ বিক্রি করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘ আট বছর ধরে নাচোল রেলষ্টেশনের দায়িত্ব পালন করায় টিকিট মাষ্টার নিজেকে রাম রাজত্বের খল নায়ক হিসাবে প্রতিষ্টিত করেছেন। গত শনিবার সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঈদে ঘরমুখো সাধারণ যাত্রী নাচোল থেকে রাজশাহী গামী কমিউটার ট্রেনের টিকিট নেওয়ার জন্য তুখোড় রৌদ্রে প্রায় ১ ঘন্টা ধরে প্লার্টফরম লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু টিকিট মাষ্টার যে রাতের আঁধারে কমিউটার ট্রেনের (নাচোল-রাজশাহী) বরাদ্ধকৃত ২০টি টিকিটই আগেই ভিআইপি পার্সনদের কাছে উৎকোচ নিয়ে বিক্রি করে রেখেছে তা সাধারন যাত্রীরা জানত না। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কমিউটার ট্রেনের সাধারন যাত্রীরা টিকিট চাইতে গেলে টিকিট মাষ্টার জানান, আগে থেকেই মোবাইল ফোনে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এখন টিকিট দেওয়া যাবেনা। টিকিট মাষ্টারের এরকম কথা শুনে সাধারন যাত্রীরা তাঁর উপর চড়াও হয়। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয় এক সাংবাদিক রাজশাহী যাওয়ার জন্য টিকিট চাইতে গেলে টিকিট মাষ্টার তাঁর সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বাকবিতন্ডতার এক পর্যায়ে টিকিট মাষ্টার স্থানীয় সাংবাদিককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে জেলহাজতে পাঠাবে বলেও হুমকী প্রদান করেন। কমিউটার ট্রেনের টিকিট নিতে আসা উপজেলার তরিকুল ইসলাম জানান, আমাদের টিকিট দিচ্ছেনা টিকিট মাষ্টার, কিন্তু লাইনে না দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিদের উৎকোচ নিয়ে ঠিকই টিকিট বিক্রি করছেন তিনি। উপজেলার নাসিরাবাদ এলাকার মামুন নামের একজন যাত্রী জানান, রেলষ্টেশনের টিকিট মাষ্টারের সাথে থাকা হাইদার নামের এক ব্যাক্তির কাছে গত ৯ জুলাই রাজশাহী যাওয়ার জন্য একটি টিকিট নেওয়ার জন্য বললে হাইদার আমার কাছে ২০০টাকা নিয়ে আমাকে রাজশাহীগামী একটি ট্রেনের টিকিট দেন। অবশ্য অনেক সময় টিকিট মাষ্টার যখন না থাকেন, তখন হাইদার রেলষ্টেশনের সকল দায়িত্ব পালন করেন বলে তিনি জানান। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গত বছর রেলষ্টেশনের জমিতে থাকা ৩টি লক্ষা গাছের দাম প্রায় ১ লক্ষ টাকা হলেও টিকিট মাষ্টার সরকারী ভাবে টেন্ডার না দিয়ে রাতের আঁধারে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে ২০ হাজার টাকা দিয়ে রেলষ্টেশনের এক জনৈক ব্যাক্তির কাছে বিক্রি করেন। টিকিট মাষ্টার প্রায় অফিসে থাকেন না বলেও সাধারন যাত্রীদের ক্ষোভ। স্থানীয় কয়েকজনকে দিয়ে রেলষ্টেশনের দায়িত্ব পালন করান টিকিট মাষ্টার আহসান হাবিব। এ বিষয়ে নাচোল রেলষ্টেশনে দায়িত্বে থাকা টিকিট মাষ্টার মোঃ আহসান হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অ¯^ীকার করেন এবং তিনি জানান, ঈদে কমিউটার ট্রেনের টিকিটগুলো আমি মোবাইল ফোনে আগেই বিক্রি করে দিয়েছি। নাচোল থানার ওসির কাছে ১০টি কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রি করেছে বলেও মাষ্টার জানান। কিন্তু নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফাছির উদ্দিনের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, টিকিট মাষ্টার আমার নাম ভাঙ্গিয়ে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। তিনি কমিউটার ট্রেনের কোন টিকিট নেন নি বলে জানান। নাচোল উপজেলার সচেতন মহলের দাবি, টিকিট মাষ্টার আহসান হাবিবকে দ্রুত অপসরন করে নাচোল রেলষ্টেশন অফিসকে দালাল মুক্ত করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।