স্টাফ রিপোর্টার \ প্রয়াত মনিরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের শিয়ালমারা গ্রামের মোঃ আফজাল হোসেন ছেলে। সে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সোনামসজিদ স্থলবন্দর শাখা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৪ শে অক্টোবর নানা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে খুন হন মনিরুল ইসলাম । তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়ে। ঈদের আনন্দ দেশজুড়ে থাকলেও তাঁর পরিবার জুড়ে রয়েছে আহাজারি। সকল পরিবারে আনন্দের বন্যা বইলেও, প্রয়াত মনিরুল ইসলামের দুই সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কান্নায় আকাশ-বাতাস অনেকটাই ভারি হয়ে উঠে। অশ্রæ ভেজা কণ্ঠে তাঁদের পিতার হত্যাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই। এছাড়া মনিরুল হত্যার প্রধান আসামী আখিরুল ইসলাম আদালতে অসুস্থতার ভূয়া সনদ দেখিয়ে চিকিৎসার নাম করে জামিনে এসে নিহত মনিরুল ইসলামের পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম অভিযোগ করেন। হুমকির কারণে বর্তমানে নিহত মনিরুল ইসলামের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। এদিকে নিহত মনিরুল ইসলামের বড় ছেলে ইসতিয়াক আহম্মেদ নবাব বলেন, আমার বাবার মারা যাওয়া প্রায় আড়াই বছর হয়েছে। আমরা আড়াই বছর থেকে ঈদ পালন করছি বাবা হারায়। আমার বাবা নাই, বাবা না থাকায় আমাদের ঈদ খুব কষ্টে চাচ্ছে। আমার বাবার খুনি আখিরুল জামিনে এসেছে, তাঁদের ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঈদ উদযাপন করছে। এটা দেখে আমাদের কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে। আমার ছোট ভাই আছে, আমার পরিবার কি কষ্ট আছে, একমাত্র বাবা হারা সন্তানই তা জানে। আমি এমপি মহাদয়কে অনুরোধ করছি, আমার বাবার খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে আমাদের নায্য বিচার পেতে সহযোগিতা করুন। নবাব আরো বলেন, আমার বাবার হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী আখিরুল ইসলাম প্রকাশের ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমাদের মামলা তুলে নিতে আখিরুল বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এছাড়া প্রয়াত মনিরুল ইসলামের ছোট ভাই মেজের আলী বলেন, আমার ভাইয়ের খুনি আখিরুল আদালতে অসুস্থতার মিথ্যে অযুহাত দেখিয়ে জামিনে এসে আবার ত্রাশ সৃষ্টি করছে স্থলবন্দরে। সে বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি দিচ্ছি। আমি স্থলবন্দরে এলাকায় ব্যবসার জন্য প্রায় সময় থাকি, খুনিরা আমাকেও বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এদিকে মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মোসাঃ রহিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ঈদ উদযাপন হলেও আমার পরিবারে ঈদের কোন আনন্দ নাই। আছে শুধু আহজারি। আমি দুই ছেলে, শ্বশুর, শাশুরিকে নিয়ে অনেক বিপদে রয়েছি। আমার ¯^ামীর খুনিরা প্রকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। ¯^ামী হারা পরিবার নিয়ে আমি যখন ঈদ পালন করছি, আর এ সুযোগে আমার ¯^ামীর খুনিরা তাদের পরিবার সাথে নিয়ে ঈদ পালন করছে। তা দেখে আমার ও আমার ছেলেদের বুক ফেটে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার ¯^ামীর প্রধান আসামী আখিরুল মিথ্যে অসুস্থ্যতার কথা বলে হাসপাতালের ভূয়া সনদ আদালতে দেখিয়ে জামিনে এসেছে। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ঈদের আনন্দের বিপরিতে যখন আমার পরিবার কান্নায় ভাসছি, তখন আমার ¯^ামীর খুনিরা এমপি গোলাম রাব্বানীর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ে মেতে উঠেছে। কিন্তু এমপি সাহেব আমাদের কোন খোঁজ নেননি। তাহলে কি বুঝবো গোলাম রাব্বানী এমপি আমার ¯^ামীর খুনিদের সহযোগিতা করছে? তিনি বলেন, আমি এমপি মহাদয়কে অনুরোধ করছি, আমার ¯^ামীর খুনিদের যেনো কোনভাবেই সহযোগিতা না করেন, হত্যার নায্য বিচার পেতে আমার পরিবারকে সহযোগিতা করবেন বলেও আশা করছি। অন্যদিকে নিহত মনিরুলের মা, মোসাঃ হাফিজা বেগম কান্নায় জড়জড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলে হারানো যন্ত্রণা শুধু মা-ই জানে। আমি ছেলে বউ ও নাতিদের নিয়ে কষ্টে ঈদ করছি। আমার ছেলের খুনিদের বিচার চাই। এব্যাপারে হত্যা মামলার প্রধান আসামী ও অভিযুক্ত আখিরুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি অ¯^ীকার করে জানান, আমি তাদের কখনো হুমকি দেইনি। আমাকে ফাঁসানোর জন্য তারা মিথ্যে অভিযোগ করছে। তিনি আরো বলেন, হত্যাকান্ডের মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। আদালত আমাকে দোষী প্রমাণ করে যতক্ষন রায় না দিবে ততক্ষন আমাকে কেউ আসামী বা হত্যাকারি বলতে পারবে না। এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ হাবিবুল ইসলাম জানান, নিহত মনিরুল ইসলামের পরিবারকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই এবং কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। যদি কেউ অভিযোগ নিয়ে আসে, তাহলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো।