মোহাঃ ইমরান আলী, শিবগঞ্জ থেকে \ সোনামসজিদ স্থলবন্দর শাখা জাতীয় শ্রমিকলীগের নাম ভাঙিয়ে স্থলবন্দর শ্রমিক সমš^য় কমিটির বেপরোয়া চাঁদাবাজি এখনো চলছে। তবে, দৈনিক চাঁপাই দর্পণ পত্রিকায় গত ৩ ও ৭ মে চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশিত হওয়া পর থেকে চাঁদাবাজ নেতারা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। স্থলবন্দর শ্রমিক সমš^য়ের নেতৃবৃন্দরা দিনের কিছু সময়ের জন্য অফিসে বসলেও লোখচক্ষুর আড়ালে গোপন বৈঠক করছেন অভিযোগের বিষয়গুলো সমাধানে। এদিকে, বন্দর তরুন কুলি সমিতিতে নতুন করে সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন শ্রমিক সমš^য় কমিটির সভাপতি সাদেকুর রহমান মাস্টারের ছেলে সোহেল রানা ও সিএন্ডএফ’র সভাপতি হারুন অর রশিদ এর জামাতা নুর আমিন। বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের নায্য পাওয়া টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে সেই চাঁদাবাজির অর্থ বন্দর তরুন কুলি সমিতির মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্ব›দ্ব বাধে। এক পর্যায়ে এই কমিটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। পরে সমঝোতার জন্য স্থলবন্দর শ্রমিক সমš^য় কমিটির স্মরণাপন্ন হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শ্রমিক সমš^য় কমিটির সভাপতি সাদেকুর রহমান মাস্টার ও সিএন্ডএফ সভাপতি হারুন অর রশিদ দ্ব›দ্ব মেটানোর শর্তে সভাপতি সাদেকুর রহমান মাস্টারে ছেলে সোহেল রানা ও সিএন্ডএফ সভাপতি হারুন অর রশিদ এর জামাই নুর আমিনকে সদস্য পদে নিয়ে আসেন। বন্দরে বিভিন্ন স্তরের চাঁদাবাজি বা কমিশনের অর্থ নিজেদের পকেটস্থ করতে পারলেও ওই সংগঠনটি তাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকায় নিজ ছেলে ও জামাইকে বসিয়ে শতভাগ হিস্যা বুঝিয়ে নেবেন তারা বলেও অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বন্দর সংশ্লিষ্ট একজন জানান, শ্রমিকদের নায্য পাওনা টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে সেই চাঁদাবাজির অর্থ বন্দর তরুন কুলি সমিতির মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্ব›দ্ব বাধে। এক পর্যায়ে এই কমিটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। পরে সমঝোতার জন্য স্থলবন্দর শ্রমিক সমš^য় কমিটির স্মরণাপন্ন হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাদেকুর রহমান মাস্টার ও হারুন অর রশিদ দ্ব›দ্ব মেটানো শর্তে মাস্টারে ছেলে সোহেল রানা ও হারুন অর রশিদ এর মেয়ে জামাই নুর আমিনকে নেতৃত্বে নিয়ে আসেন। কিন্তু তারা কোনদিনই কুলির কাজ না করে শুধুমাত্র বন্দরের প্রভাবশালী নেতাদের ছেলে-জামাই হওয়ায় এই তরুন কুলি সমিতিতে জায়গা করে নেয়। সূত্রেটি আরো বলেন, কুলি না হয়েও কিভাবে কুলি সমিতির সদস্য হয়, এটা নিয়ে বন্দর এলাকায় সাধারণ কুলিদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমনিতেই সাধারণ শ্রমিকদের নায্য মুজুরি না বুঝিয়ে দিয়ে, আবার উল্টো দিকে কুলি সাজিয়ে দিয়ে ওই সমিতিরও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টায় লিপ্ত তারা। সুত্রটি জানায় বিভিন্ন পত্রিকায় বন্দরের শ্রমিক সমš^য়ের নেতৃবৃন্দের অনিয়মের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ঠিকমত তাঁরা অফিসে বসেন না। তবে, গোপনে কিছু সময়ের জন্য আসেন, আবার কাউকে না জানিয়ে চলেও যান। বিষয়টি শ্রমিক সমš^য় কমিটির সচিব আইনাল হক নিশ্চিত করেন।
সূত্রটি আরো জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাক থেকে শ্রমিকদের নামে ৮০ টাকা নিলেও শ্রমিকদের এই টাকার এক কানাকড়িও দেয়া হয় না। শ্রমিকদের নামে উঠানো এই টাকাও ভাগ বাটোয়ারা হয় শ্রমিক সমš^য় কমিটির নেতাদের মাঝে। যেখানে সাধারণ শ্রমিকরা সারাদিন পরিশ্রম করার পর গড়ে যে মুজুরি পাই, তাতে শ্রমিকদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ঠিকমত সংসার চালানো দায়। অথচ এই শ্রমিকদের ঘামঝরানো টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিক সমš^য়ের নেতারা। সাধারণ শ্রমিকরা তাদের ঘামঝরানো অর্থ সঠিক ভাবে না পেয়ে শ্রমিকদের মাঝে চরম অসন্তোষ থাকলেও সমš^য় নেতৃবৃন্দের ভয়ে সব মুখ বুজে সহ্য করছেন বলে শ্রমিকরা জানান।
এব্যাপারে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের শ্রমিক সরদার মোঃ মোকলেশুর রহমান মুকলেস সর্দারের কাছে সাদেকুর রহমান মাস্টারের ছেলে সোহেল রানা ও হারুন অর রশিদ এর মেয়ে জামাই নুর আমিন কুলি কি-না তা জানতে চাইলে তিনি সংশ্লিষ্ঠ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো বিভিন্ন হুমকি ¯^রুপ কথা বলেন এই প্রতিবেদককে। এব্যাপারে সোহেল রানা বলেন, যে কেউ এই সমিতির সদস্য হতে পারে। এখানে আমিও হয়েছি। বন্দর তরুন কুলি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. সাদিকুল ইসলাম এবিষয়ে বলেন, সাদেকুর রহমান মাস্টারের ছেলে সোহেল রানা ও হারুন অর রশিদ এর জামাই নুর আমিন কুলি না। তারা ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য আমদানি করেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের ৩০/৪০ জন শ্রমিকের কাজ ছিল না। তারা বেকার হয়ে পড়ে ছিল। শ্রমিকদের ¯^ার্থে আমরা তাদেরকে সমিতিতে নিয়েছি। অন্য কিছু নয়। উল্লেখ্য, গত ৩ মে “দৈনিক চাঁপাই দর্পণ”সহ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল-এ “বন্দরে চাঁদাবাজির নেতৃত্বে সিএন্ডএফ সভাপতি, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে শ্রমিকলীগের নামে সমš^য় কমিটির চাঁদাবাজির অভিযোগ” ও গত ৭ মে “বন্দরে শ্রমিকদের টাকায় ভাগ বসাচ্ছে দলীয় নেতারা, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে সমš^য় কমিটির চাঁদাবাজি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ” শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বর্তমানে স্থলবন্দরে বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।