শিবগঞ্জ প্রতিনিধি \ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ১৭ শতক জমি বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে জাল দলিল করে জবরদখল করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সাব্বির উদ্দিন তার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনে শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অবশ্য অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও চেয়ারম্যান বিষয়টি ক্যামেরার সামনে শিকার না করলেও পরে মোবাইল ফোনে গোপনে পরোক্ষভাবে তিনি তা স্বীকার করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার অন্যতম প্রাচীন একটি বিদ্যালয় বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়। যার ২টি মার্কেটসহ ৬২ বিঘা নিজস্ব সম্পত্তি রয়েছে। বিনোদপুর বাজার সংলগ্ন ইউপি ভবন ও স্কুলের জমি হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের জমি বাড়াতে ও মার্কেট নির্মাণের জন্য এ জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আবেদন সূত্রে জানা গেছে, প্রাচীন এ বিদ্যালয়টির গত বছরের ১০মে শিবগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সলেমান আলী মোহরারের সম্পাদনে বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১একর জমির মধ্য থেকে বিনোদপুর মৌজার ২১৫৬ ও ২১৬৫ নং ২টি দাগের ১৭ শতক জমি ৮নং বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের অনুকুলে হস্তান্তর করা হয়। সূত্রটি আরও জানায়, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদকে জমি দেয়ার জন্য ম্যানেজিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তা অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে আবদেন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব সালমা জাহান ¯^াক্ষরিত একটি আদেশের মাধ্যমে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি দান, বিনিময় বা বিক্রয়ের কোন বিধান নাই এ সংক্রান্ত একটি বিধিমালার উদ্ধৃতি দিয়ে জমি হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ আদেশের পরে আবারো শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে একই বছরের ৯অক্টোবর একই ধরনের আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রনালয় থেকে ১৮নভেম্বর আবারো একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু এ আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এর অনেক আগেই গোপনে গত মে মাসে জমি হস্তান্তর দেখানো হয়। আর এর জন্য স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সাব্বির উদ্দিন নিজেকে নির্দোষ দাবী করে জানান, তার অগোচরে তার ¯^াক্ষর জাল করে সম্পুর্ন বে-আইনীভাবে তাকে না জানিয়ে তার বিদ্যালয়ের নামের ১৭শতক জমি জাল করার পর তা আইনসিদ্ধ করতে এর কয়েকমাস পর ম্যানেজিং কমিটিতে জমি হস্তান্তরের বিষয়টি পাশ করানো হয়। কিন্তু সে বিষয়টি মন্ত্রনালয় নিষেধাজ্ঞা জারির পরও তা মানা হয়নি। বিষয়টি গোপন রাখার পর উক্ত জমি খারিজের জন্য চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে তিনি জানতে পারেন তার বিদ্যালয়ের জমি জাল হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, এ জালিয়াতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দফতরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনে তিনি আদালতে স্মরণাপন্ন হওয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এদিকে ভ‚মি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে হস্তান্তরিত জমির মালিক বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিনাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের গর্ভনিং বডির সভাপতি এনামুল হক ও কথিত জমি দাতা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাব্বির উদ্দিনকে ভ‚মি অফিসে বিষয়টি জানার জন্য ডাকা হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন জমি হস্তান্তর করেননি এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র ভ‚মি অফিসে জমা দেন। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বরমান হোসেন জানান, বিনোদপুর ইউপি চেয়ারম্যান সম্প্রতি একটি জমির খারিজের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আপত্তি জানানোই তা শুনানীর পর্যায়ে আছে। আর জমি জ্বাল হয়েছে কিনা সেটা প্রমানের দায়িত্ব তাদের নয়। অভিযোগকারী আদালতে দলিলের নকল তুলে দলিল বাতিলের আবেদন করলে তা আদালতেই নিষ্পত্তি হবে।